hsc

দূষক পদার্থসমূহের বায়ু ও পানিতে দ্রবীভূত থাকার কৌশল

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK

দূষক পদার্থসমূহের বায়ু ও পানিতে দ্রবীভূত থাকার কৌশল

বায়ু ও পানিতে দূষক পদার্থের দ্রবীভূত থাকার প্রক্রিয়া প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট উভয় কারণেই ঘটে। রাসায়নিক গঠন, তাপমাত্রা এবং পরিবেশগত অবস্থার উপর ভিত্তি করে দূষক পদার্থ বায়ু বা পানির সাথে মিশে থাকে এবং পরিবেশে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে।


বায়ুতে দূষক পদার্থের দ্রবীভূত থাকার কৌশল

  1. গ্যাসীয় দূষক পদার্থ:
    • সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂), নাইট্রোজেন অক্সাইড (NOₓ), এবং কার্বন মনোক্সাইড (CO) বায়ুমণ্ডলে মিশে গ্যাসীয় দূষণ সৃষ্টি করে।
    • উচ্চ তাপমাত্রায় গ্যাসের গতিশীলতা বাড়ে এবং এটি দ্রুত পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে।
  2. কণা দূষণ (Particulate Matter):
    • সূক্ষ্ম কণা (PM2.5 এবং PM10) বায়ুর সাথে মিশে দীর্ঘ সময় ভেসে থাকে।
    • বায়ু প্রবাহের মাধ্যমে এটি দূরবর্তী এলাকায় স্থানান্তরিত হয়।
  3. আর্দ্রতার ভূমিকা:
    • উচ্চ আর্দ্রতার পরিবেশে গ্যাসীয় দূষক পদার্থ পানির কণার সাথে মিশে অ্যাসিড বৃষ্টি সৃষ্টি করতে পারে।
    • উদাহরণ: সালফার ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড পানির সাথে মিশে সালফিউরিক অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড তৈরি করে।

পানিতে দূষক পদার্থের দ্রবীভূত থাকার কৌশল

  1. রাসায়নিক দ্রবণীয়তা:
    • কিছু দূষক যেমন অ্যামোনিয়া (NH₃) এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) পানিতে খুব সহজে দ্রবীভূত হয়।
    • দ্রবণীয়তা তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে; ঠাণ্ডা পানিতে গ্যাস দ্রবণীয়তা বেশি।
  2. পানির pH এবং দূষণ:
    • অ্যাসিডিক বা ক্ষারীয় দূষক পদার্থ পানির pH পরিবর্তন করে।
    • উদাহরণ: অ্যামোনিয়া পানিতে দ্রবীভূত হয়ে অ্যালকালাইন পরিবেশ তৈরি করে।
  3. জৈব দূষক পদার্থ:
    • তেল, গ্রিজ এবং রাসায়নিক সার পানির উপরিভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকে এবং ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হয়।
    • জৈব পদার্থ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ভাঙা হলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয়।

পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব

  • বায়ু ও পানিতে দ্রবীভূত দূষক পদার্থ শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ এবং জলজ প্রাণীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
  • পানিতে দ্রবীভূত অ্যাসিড ও ভারী ধাতু মানবদেহে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ কৌশল

  1. ফিল্টারিং ও স্ক্রাবার: বায়ুতে কণা এবং গ্যাসীয় দূষণ কমানোর জন্য শিল্পে ফিল্টার এবং স্ক্রাবার ব্যবহার করা হয়।
  2. জল পরিশোধন: পানিতে দ্রবীভূত রাসায়নিক ও জৈব দূষণ কমাতে পরিশোধন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
  3. প্রাকৃতিক সমাধান: উদ্ভিদ এবং জলজ প্রাণীর মাধ্যমে দূষক পদার্থ শোষণ করা সম্ভব।

Content added By
Promotion